সাতক্ষীরায় হিন্দু পরিবারের জমি দখল, পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ

সুনীল কুমার মন্ডলের চার বিঘা জমি জবরদখল করেছে স্থানীয় প্রভাবশালী সামাদ গাজী ও আলমগীরের নেতৃত্বে ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা। সামাদ গাজী ও আলমগীর গং উক্ত জমির ১০প্রজাতির শতাধিক ফলজ ও বনজ গাছে কেটে ফেলেজে, গাছের ফল লুটপাট করেছে এবং সুনীল মন্ডলের বাড়িতে প্রবেশের প্রধান রাস্তা বাঁশ দিয়ে আটকে দিয়েছে। এরপর দখল করা উক্ত জমিতে ঘর নির্মাণ কাজ শুরু করেছে।

ঘটনাটি ঘটেছে, সাতক্ষীরা জেলা কালিগঞ্জ উপজেলার চম্পাফুল কালীবাড়ি বাজার এলাকায়।
১৭ আগষ্ট রোরবার ভোর থেকে ১৮আগষ্ট সোমবার বিকেল পর্যন্ত চলে এই জবরদখল কর্মকাণ্ড।

রোববার ভোরে সামাদ গাজী ও আলমগীর গং হামলা এবং জমি দখল শুরু করলে সাথে সাথে থানায় অভিযোগ করার পর পুলিশ ঘটনাস্থালে পৌঁছায় পরের দিন সোমবার দুপুরে। এ সময় পুলিশের উপস্থিতিতেও দখল কাজ চালিয়ে যায়।

এমনকি জবরদখলের কর্মকান্ড মোবাইলে ছবি ও ভিডিও ধারণ করায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্য শংকর মণ্ডলের মোবাইল ফোন থেকে উপপরিদর্শক (এসআই) সাব্বির আহমেদ ফুটেজ মুছে দেন।

সুনীল কুমার মণ্ডল বলেন, ওয়ারিশ ও ক্রয় সূত্রে দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে তারা শান্তিপূর্ণভাবে ওই জমি ভোগদখল করে আসছেন। আদালতের সর্বোচ্চ রায়ও তাদের পক্ষে রয়েছে। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালী সামাদ গাজী ও আলমগীরের নেতৃত্বে ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা জমি দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে। এর আগেও বাধা দিতে গেলে তাদের মারধর ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কয়েকটি দেওয়ানি মামলা রয়েছে, যার পরবর্তী তারিখ আগামী ২৪ আগস্ট ও ৫ সেপ্টেম্বর ধার্য করেছেন আদালত। এ অবস্থায় প্রতিপক্ষ আদালতের রায় আগে ভাগে ভিন্ন খাতে নেওয়ার জন্যই হামলা ও জবরদখলের চেষ্টা চালাচ্ছে।

ইউপি সদস্য ইব্রাহীম হোসেন, আব্দুস সবুর, মাস্টার সাধুরঞ্জন খাঁসহ কয়েকজন বলেন, প্রকাশ্যে ফিল্মি স্টাইলে জমি দখলের ঘটনা ঘটলেও পুলিশ কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। সামাদ গাজী এর আগে জমি সংক্রান্ত বিরোধে এলাকায় একাধিক হত্যা মামলার আসামি ছিলেন। স্থানীয়রা বলেন, তিনি প্রভাব খাটিয়ে বিচার এড়িয়ে গেছেন। এছাড়া এক পুরোহিতের স্ত্রীকে ধর্ষণের মামলায়ও তার নাম উঠে এসেছে।

এ বিষয়ে সামাদ গাজীর সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি থানায় থাকার কথা জানিয়ে পরে কথা বলবেন বলে জানান।

কালিগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক সাব্বির আহমেদ স্বীকার করেছেন, তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে শংকর মণ্ডলের মোবাইল থেকে ভিডিও ডিলিট করেছেন। তবে তিনি বলেন, দুপক্ষকে নিয়ে সমাধানের জন্য থানায় বসার কথা বলা হয়েছিল।

কালিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, রোববার কোনো জবরদখলের ঘটনা ঘটেনি। সোমবার খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। আদালতে যাওয়ার জন্য তিনি সুনীল মণ্ডলকে পরামর্শ দিয়েছেন।

সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি রোববার রাতেই জানার পর ওসিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *