লাভ জিহাদ: সোনিয়া হালদারের মরদেহ উদ্ধার।

ছবি: লাভ জিহাদের শিকার সোনিয়া হালদার।

লাভ জিহাদের ফাঁদে পড়া সোনিয়া হালদারের(২১) মরদেহ উদ্ধার।

১২ নভেম্বর বুধবার রাতে ভারত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার কাকদ্বীপ শহরের প্রতাপাদিত্য গ্রাম পঞ্চায়েতের নয়াপাড়া এলাকায় আইনজীবী শেখ মনোয়ার আলমের চেম্বার থেকে সোনিয়া হালদারের(২১) ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়।

লাভ জিহাদের শিকার সোনিয়া হালদার(২১) কাকদ্বীপের গান্ধীনগর এলাকার বাসিন্দা। সোনিয়া ল- কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলো।

জানাযায়, সোনিয়া হালদার প্রতিদিন আইনজীবী শেখ মনোয়ার আলমের কাছে প্র্যাকটিসের জন্য যেতেন।

পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, আইনজীবী মনোয়ার আলমের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের জেরেই আত্মহত্যা করেছে সোনিয়া।

সোনিয়া হালদারের ব্যাগ থেকে একটি প্রেমপত্র উদ্ধার হয়েছে, পত্র থেকে জানা যায়- সোনিয়া হালদার আইনজীবী শেখ মনোয়ার আলম কে ভালোবাসেন। তবে তাদের দুজনের বয়সের অনেকটাই ডিফারেন্ট। সোনিয়া হালদারের বয়স ২১ এবং শেখ মনোয়ার আলমের বয়স ৩৫। দুজনের ভালোবাসা শুরু হয় দারজিলিং এ গিয়ে এবং এই প্রেমের বয়স মাত্র ৭ মাস।

ছবি: সোনিয়া হালদারের ব্যাগ থেকে উদ্ধার হওয়া প্রেমপত্র।

সোনিয়া আরও লিখেছেন, প্রথমে আমরা দুজনে কেউ ভাবিনি যে, আমরা দুজন দুজনকে অতো ভালোবেসে ফেলব। তারপর আমরা এক সাথে থাকি। এক সাথে রাত কাটাই মেদিনিপুরে গিয়ে আর সেখান থেকে শুরু হয় আমাদের প্রথম একসাথে একটি ঘরে থাকা আর একই সাথে এক বিছানায় ঘুমান।
আরও লিখেছেন, এবার আমরা বিয়ে করতে চলেছি আর নতুন জীবন শুরু করবো খুব তাড়াতাড়ি।

পরিবারের পক্ষ থেকে আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তোলা হয়েছে খুনের অভিযোগ।

সোনিয়া হালদারের বোন বলেন, “বাবা গিয়ে দেখে অজ্ঞান হয়ে যায়। শেখ মনোহর আলমের চেম্বারে দিদিকে পাখায় গলায় ওড়নার ফাঁস লাগিয়ে ঝুলতে দেখে। শেখ মনোহর আলমই কাকদ্বীপ পুলিশকে খবর দিয়েছে। তারপর থেকে আমরা ফোন করছি, ফোন সুইচ অফ। আমাদের তো মনে হচ্ছে, এটা খুন।” নিহত ছাত্রীর মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। তবে ফোনের সিম পুলিশ পায়নি।

সোনিয়া হালদারের পরিবারের অভিযোগ, দীর্ঘদিনের সম্পর্কে জটিলতা, বিয়ের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ এবং মানসিক নির্যাতনের ফলে সোনিয়া এই চরম পদক্ষেপ নিয়েছেন।

পরিবারের দাবি, চিঠিতে স্পষ্ট লেখা আছে যে আইনজীবীর সঙ্গে তাঁর গভীর সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েও শেষমেশ পিছিয়ে যান শেখ মনোয়ার। মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে সোনিয়া এই পথ বেছে নেন। সোনিয়ার মা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “আমার মেয়ে খুব ভালো ছিল। ওই লোকটা ওকে প্রতারণা করেছে। বিয়ে করবে বলে সম্পর্ক রেখেছে, তারপর ছেড়ে দিয়েছে। আমার মেয়ে এই অপমান সহ্য করতে পারেনি।”

বাবা বিজয় হালদার জানান, “আমরা কাকদ্বীপ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। ওই আইনজীবীকে গ্রেপ্তার করতে হবে। আমার মেয়ের মৃত্যুর বিচার চাই।” পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযোগের ভিত্তিতে শেখ মনোয়ার আলমের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা (৩০৬ ধারা) সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *