
লাভ জিহাদের ফাঁদে পড়ে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয় প্রিয়াংকা বিশ্বাস(৩৫)।
পাঁচলাইশে পার্লারের ওয়াশরুমে থেকে প্রিয়াঙ্কা বিশ্বাসের (৩৫) ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের প্রায় ২০ দিন পর তদন্তে জানা গেছে প্রিয়াংকা বিশ্বাসের আত্মহত্যার কারণ।
গত ৩ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার চট্টগ্রাম জেলা নগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন জিইসি মোড় এলাকার এরিয়াল লিজেন্ড ভবনের ৮ম তলার নাদিয়া’স মেকওভার নামে একটি পার্লারের ওয়াশরুম থেকে প্রিয়াঙ্কা বিশ্বাসের (৩৫) মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
প্রিয়াঙ্কা বিশ্বাস রাউজান উপজেলার পাহাড়তলী ইউনিয়নের দেওয়ানপুর গ্রামের সমীর দে ও অঞ্জলী দে দম্পতির মেয়ে এবং বাঁশখালী উপজেলার সিকদারবাড়ির সজীব দত্তের স্ত্রী।

আরও পড়ুন
চট্টগ্রামে প্রিয়াঙ্কা বিশ্বাসের রহস্যজন মরদেহ উদ্ধার!
তদন্তে জানাযায়, প্রিয়াংকা বিশ্বাস একজন বিবাহিত নারী। তার স্বামীর নাম সজীব কান্তি দত্ত। স্বামী থাকা শর্তেও দুই বছর আগে প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের (৩৫) লাভ জিহাদের ফাঁদে পড়ে প্রিয়াংকা বিশ্বাস (৩৫)।
তাদের এই গোপন প্রেমের সম্পর্কে গত ২৪ ও ২৫ আগস্ট তারা রাজধানী ঢাকার খিলক্ষেত এলাকায় এক বন্ধুর বাসায় এক সাথে ছিলেন এবং ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে জড়ান।
তারপর প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের জিহাদী লক্ষ্য পূরণ হয়ে গেলে। ঢাকা থেকে ফিরে এসে তাদের সম্পর্কে ফাটল ধরে। কারণ হিসেবে জাহাঙ্গীর আলম জানান পারিবারিকভাবে তার অন্যত্র বিয়ে ঠিক হয়েছে। এই খবরে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন প্রিয়াংকা। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব শুরু হয়। হোয়াটসঅ্যাপে চ্যাট হয় তর্কবিতর্কে। পরে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয় প্রিয়াংকা বিশ্বাস।
৩ সেপ্টেম্বর বিকেলে প্রিয়াংকা তার কর্মস্থল সানমার ওশান সিটির পাশের ‘নাদিয়া’স মেকওভার’ নামক বিউটি পার্লারের ভেতরে যান। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, মৃত্যুর আগে তিনি দীর্ঘ সময় হোয়াটসঅ্যাপে প্রেমিক জাহাঙ্গীরের সঙ্গে কথা বলেন। পরে বিকেল ৪টা থেকে সাড়ে ৫টার মধ্যে ওয়াশরুমের ঝর্ণার সাথে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। পরিবার তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে মৃত ঘোষণা করেন।
২৩ সেপ্টেম্বর আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম (৩৫) কে। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় জাহাঙ্গীর আলমের অবস্থান শনাক্ত করে চট্টগ্রাম কর্ণফুলীর ইছানগর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম (৩৫) চট্টগ্রাম জেলা রাউজান থানার দেওয়ানপুর গ্রামের তালুকদারের বাড়ীর রবিউল আলমের ছেলে। জাহাঙ্গীর আলম ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার টেকনোলজি থেকে পড়ালেখা শেষ করে একটি সিমেন্ট কোম্পানিকে চাকরি করতেন। দুই মাস আগে তিনি কোম্পানিটির চাকরি ছাঁড়েন। তবে তিনি সহকর্মীদের জানিয়েছিলেন জার্মানি চলে যাবেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম প্রেম ও ঢাকায় একসাথে থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
পাঁচলাইশ থানার এসআই ফারুক আহমদ জানান, প্রিয়াংকার আত্মহত্যায় জাহাঙ্গীর আলম সরাসরি প্ররোচক হিসেবে ভূমিকা রেখেছেন। তার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০৬ ধারা (আত্মহত্যায় প্ররোচনা) অনুযায়ী মামলা রুজু হয়েছে।
পাঁচলাইশ মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ সোলাইমান জানান, আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে গ্রেপ্তার জাহাঙ্গীর এর বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। আসামিকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। যার থানা মামলা নম্বর ২৭/১৭৭।