
‘হীড বাংলাদেশ’ নামে একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার (এনজিও) অফিস থেকে শঙ্কর সাহার(৪০) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এনজিও অফিসে ঋণ নিতে গিয়ে অপমানিত হয়ে বিষপান করে আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ।
নিহত শঙ্কর সাহা(৪০) নোয়াখালী জেলা হাতিয়া উপজেলার চরইশ্বর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সচিন্দ্র সাহার ছেলে।
৮ সেপ্টেম্বর সোমবার সন্ধ্যায় হীড বাংলাদেশের হাতিয়া উপজেলা সদর ওছখালী অফিস থেকে শঙ্কর সাহাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মঙ্গলবার সকালে শঙ্করের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ।
ওছখালী বাজার বণিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক শাহজাহান বলেন, “মোয়া ও চা বিক্রেতা শঙ্কর সাহা এক বছর আগে হীড বাংলাদেশ থেকে দুই লাখ টাকা ঋণ নেন। প্রায় সব কিস্তি দেওয়ার পর সংস্থার লোকজন পুরোনো ঋণ পরিশোধ করলে তাকে নতুন করে ঋণ দেওয়ার আশ্বাস দেন। এরপর ধার করে আগের ঋণ পরিশোধ করে নতুন ঋণের বিষয়ে কথা বলতে সোমবার সন্ধ্যায় হীড বাংলাদেশের অফিসে যান শঙ্কর। আগের ঋণের কিস্তি নিয়মিত পরিশোধ করতে না পারায় শঙ্করকে ‘তিরস্কার করে’ নতুন করে ঋণ দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। এর কিছুক্ষণ পর ম্যানাজারের কক্ষের বাথরুমে ঢুকে ‘বিষ পান’ করেন তিনি। পরে সংস্থার লোকজন দরজা ভেঙে অচেতন অবস্থায় শঙ্করকে উদ্ধার করে হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।”
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক আরিফ হোসেন বলেন, “রোগীর শরীরে বিষক্রিয়া থাকায় ওয়াশ করা হয়। এর অল্পক্ষণের মধ্যে তার মৃত্যু হয়।”
শঙ্করের ভাই উত্তম সাহার অভিযাগ, তার ভাইকে ‘পরিকল্পিতভাবে’ হত্যা করা হয়েছে।
শঙ্করের ভাই উত্তম বলেন, “হীড বাংলাদেশের লোকজন আমার ভাইকে ঋণ দেওয়ার কথা বলে মোবাইল ফোনে তাদের অফিসে ডেকে নিয়ে ‘অপমান করে’ পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে।”
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে হীড বাংলাদেশের হাতিয়া শাখা ব্যবস্থাপক কাওসার আহমেদ বলেন, “শঙ্কর সাহা আগের ঋণ পরিশোধ করেছে। সোমবার তিনি নতুন ঋণের জন্য আসলে তাকে বলা হয় যে, তার আগের কিস্তি পরিশোধ অনিয়মিত ছিল। এরপর ম্যানাজারের কক্ষে বাথরুমে ঢুকে বিষ পান করেন তিনি। পরে হাসপাতালে নিলে তার মৃত্যু হয়।”
এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে ওসি একেএম আজমল হুদা জানিয়েছেন।