
দূর্গাপূজা উপলক্ষে সমাজসেবা অফিস থেকে অনুদানের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক চক্র।
এই ঘটনা ঘটে পাবনা জেলা ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী ইউনিয়নের বাঘইল দাসপাড়া এলাকায়।
জানাযায়, অজ্ঞাত নম্বর থেকে ঈশ্বরদী উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি সুনীল চক্রবর্তীর কাছে এক ব্যক্তি ফোন করেন। তিনি নিজেকে সমাজসেবা কার্যালয়ের একজন স্টাফ বলে পরিচয় দেন। জানান, এলাকার প্রতিটি মন্দিরের পাঁচ দরিদ্র পরিবারের জন্য অনুদান এসেছে। এ কথা শুনে সুনীল চক্রবর্তী বাঘইল দাসপাড়া গ্রামের শ্রী শ্রী বাড়োয়ারী মাতৃমন্দির কমিটির সভাপতি পলাশ চন্দ্রকে জানান। অনুদান গ্রহণ করতে ওই ব্যক্তির নম্বরে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। যোগাযোগ করলে বিকাশ নম্বর দিয়ে জনপ্রতি ৬০০ টাকা করে পাঠাতে বলা হয়। পলাশ চন্দ্র বিষয়টি নিয়ে এলাকার দরিদ্র হিন্দু বাসিন্দাদের সঙ্গে আলাপ করেন। তাদের মধ্যে ৩৬ জনের কাছ থেকে ২১ হাজার ৬শ টাকা তুলে ওই বিকাশ নম্বরে পাঠিয়ে দেন। কয়েক দিন অপেক্ষার পর অনুদান না পেয়ে বিকাশ নম্বরে ফোন করে সেটি বন্ধ পান।
ভারতী রাণী ও পারুল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা খুবই গরিব। কেউ জুতা সেলাই, কেউ রিকশাচালক ও কেউ মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করি। দুর্গাপূজা উপলক্ষে অনুদান দেওয়ার কথা বলে প্রতারকরা জনপ্রতি ৬০০ টাকা করে নিয়েছে।’
বাঘইল দাসপাড়া বাড়োয়ারী মাতৃমন্দির কমিটির সভাপতি পলাশ চন্দ্র বলেন, ‘উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি সুনীল চক্রবর্তী আমাকে ফোনে পাঁচজনের নামে অনুদান বরাদ্দ হয়েছে জানিয়ে পরিষদে যোগাযোগের একটি নম্বর দেন। সেই নম্বরে যোগাযোগ করে তাদের পরামর্শ অনুযায়ী ২১ হাজার ৬শত টাকা বিকাশে পাঠাই। এর পর থেকে নম্বরটি বন্ধ পাচ্ছি।’
এ বিষয়ে ঈশ্বরদী পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি সুনীল কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘সমাজসেবা কার্যালয়ের পরিচয় দিয়ে অনুদানের কথা জানায়। ভেবেছিলাম সরকারি অনুদান পেলে দরিদ্রদের উপকার হবে। তাই তাদের নম্বরটি দিয়েছি। কিন্তু বুঝতে পারিনি এটি একটি চক্রের প্রতারণা। বিষয়টি থানা ও সমাজসেবা অফিসে জানানো হয়েছে।’
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আতিকুর রহমান বলেন, দুর্গাপূজা উপলক্ষে ব্যক্তিকেন্দ্রিক কোনো অনুদান দেওয়া হচ্ছে না। সমাজসেবা কার্যালয় থেকে কাউকে ফোনও করা হয়নি। এটি প্রতারক চক্রের কারসাজি। তিনি এ চক্র থেকে সবাইকে সচেতন থাকতে বলেছেন।