
বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় প্রায় অর্ধশত পুজা মন্ডপে সম্প্রদায়িক হামলার তথ্য পেয়েছে বলে জানাল পুলিশ। এসব ঘটনায় ১৫টি মামলা হয়েছে এবং ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
৩০ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার বাংলাদেশে পুলিশ সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম এই তথ্য জানান।
বাহারুল আলম বলেন, গত ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ দিনে সারা বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় ৪৯টি দুর্গাপূজা মণ্ডপে হামলার ঘটনা জানতে পেরেছে পুলিশ। এসব ঘটনায় ১৫টি মামলা হয়েছে এবং ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে, ‘শারদীয় সুরক্ষা’ ওয়েবসাইট ও মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে সারাদেশের পূজামণ্ডপে এখন পর্যন্ত মোট ১৩২টি ঘটনার খবর পেয়েছে ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি।
তেজগাঁওয়ে এনটিএমসি কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভায় সংস্থাটির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল কাইয়ুম মোল্লা এ তথ্য জানান।
আবদুল কাইয়ুম মোল্লা বলেন, ‘অ্যাপের মাধ্যমে যেকোনো ঘটনা—প্রতিমা ভাঙচুর, ভক্তদের প্রবেশে বাধা কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব—তাৎক্ষণিকভাবে রিপোর্ট করা হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সঙ্গে সঙ্গে জানতে পারে এবং ব্যবস্থা নিতে পারে।’
এদিকে আইজিপি আরও জানান, সারাদেশের ৩১ হাজার ৬০৬টি পূজামণ্ডপের ভেতরে ও আশপাশে কড়া নজরদারি রাখা হয়েছে। কোনো সমস্যা দেখা দিলে পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পারে।
বেশ কিছু ঘটনার উল্লেখ করে তিনি বলেন, চট্টগ্রামের কোতোয়ালিতে এক ব্যক্তি নিজেকে জামায়াতকর্মী পরিচয় দিয়ে মণ্ডপে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন, মাদারীপুরের শিবচর ও ভোলার লালমোহনে সংঘর্ষের সময় প্রতিমা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, কুমিল্লায় ফেসবুকে পূজা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে পোস্ট দেওয়া হয়, সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে একটি মণ্ডপে পুলিশ ও আনসার সদস্যদের ওপর হামলা হয়, বাগেরহাটের চিতলমারীতে মণ্ডপের প্রবেশপথের কাপড় কেটে ফেলা হয়।
এছাড়া বেশ কিছু স্থানে মণ্ডপ কমিটির সদস্যদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে এবং প্রতিমার আংশিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
কোথাও সাধারণ ডায়েরি (জিডি), আবার কোথাও মামলা রুজু করা হয়েছে এবং এর ভিত্তিতে গ্রেপ্তারও হয়েছে। কিছু আসামি ইতোমধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আমরা সতর্ক আছি যেন কেউ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে না পারে বা আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার সুযোগ না পায় বলেছেন আইজিপি বাহারুল আলম।
গ্রেপ্তারদের পরিচয় প্রসঙ্গে আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, এ পর্যন্ত কারও সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক দলের সম্পৃক্ততার প্রমাণ মেলেনি। সবদিক বিবেচনা করেই তদন্ত এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলে জানান আইজিপি।
এনটিএমসি মহাপরিচালক জানান, তাদের ৩২ সদস্যের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম মনিটরিং টিম ২৪ ঘণ্টা কাজ করছে। কোনো গুজব ছড়ালেই তারা এক মিনিটের মধ্যে ফ্যাক্ট-চেক করতে পারেন।