
বাংলাদেশের ঢাকার বাসিন্দা মুসলিম দম্পতির নাম ভারতের ভোটার তালিকায়। এর পিছনে রয়েছে মুসলিম তৃণমূল নেতা।
এই দম্পতি হলেন, আকবর আলি গাজি (৭২) এবং ফারহানা গাজি (৫৮)।
এই মুসলিম দম্পতি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মোহাম্মদপুর থানার বায়তুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকার বাসিন্দ।
আকবর আলির পরিচয়পত্র থেকে জানা যায় তিনি ২০১৭ সালে বাংলাদেশের ভোটার হন ৷ পরবর্তী সময়ে তাঁর স্ত্রী ফারহানার নামও ওঠে বাংলাদেশের ভোটার তালিকায় ৷ এরপর, ২০১৯সালে স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই বাংলাদেশ থেকে চলে আসেন ভারতে ৷

ভারতে এসে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার হাসনাবাদের মাখালগাছা পঞ্চায়েত এলাকায় বসবাস শুরু করেন ৷

ভাইপো গিয়াসউদ্দিন গাজির বাড়িতে বসবাস শুরু করেন এই দম্পতি। এইসময় ২০১৯ সালে ভারতের ভোটার তালিকায় ও নাম উঠে এই দম্পতির। গিয়াসউদ্দিন গাজি তৃণমূলের মাখালগাছা অঞ্চলের সম্পাদক। এই তৃণমূল নেতার আশ্রয়েই দিনের পর দিন অবৈধ ভাবে বসবাস শুরু করেন এই মুসলিম দম্পত্তি।
তৃণমূল নেতা গিয়াসউদ্দিন গাজি বলেন, “আমার কাকা কর্মসূত্রে বাংলাদেশে থাকেন ৷ মাঝে উনি বলেছিলেন এখানে বসবাস করবেন ৷ ওঁর (আকবর আলি) এখানে পৈতৃক ভিটে এবং জমিজমাও রয়েছে ৷ উনি মাঝে এখানে এসেছিলেন ৷ আবার চলেও গিয়েছেন ৷ ওখানে (বাংলাদেশে) ভোটার তালিকায় নাম আছে কি না, সেটা আমার জানা নেই ৷ কিন্তু, বছর সাত-আট আগে কাকার নাম উঠেছে ভারতের ভোটার তালিকায় ৷ এটুকু জানি ৷”

আশ্রয় দেওয়া প্রশ্নে গিয়াসউদ্দিন বলেন, “ওঁর এখানে পৈতৃক ভিটে ও জমিজমা রয়েছে ৷ সেটা আমি কীভাবে অস্বীকার করব ? ওঁর জন্ম এখানে ৷ মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনাও করেছেন হাসনাবাদে ৷ তারপর কর্মসূত্রে উনি বাংলাদেশে পাড়ি দেন ৷ যদি, দু-দেশে নাম থাকে, তাহলে ভারতের ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ যাবে ৷ থাকবেন বলেই হয়তো এখানে ভোটার লিস্টে নাম তুলেছিলেন ৷ জমি জায়গা থাকলে অনেকেই এরকম করে ৷ নতুন করে কাকা কোনও জমি কেনেননি এখানে ৷ বাবার অংশটুকুই রয়েছে ৷ দু-দেশে নাম থাকা নিয়ে কী আইন রয়েছে, সেটা আমি সঠিক জানি না ৷ জানলে এরকমটা হতে দিতাম না ৷ কাকা-ভাইপোর বাড়িতে আসবে এটাই স্বাভাবিক ৷ এর মধ্যে অন্যায় কী আছে !”
বিজেপির বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুকল্যাণ বৈদ্য বলেন, “এটা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় ৷ গোটা রাজ্য জুড়ে এরকম আকবর গাজিরা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে ৷ বাংলাদেশ থেকে এসে তৃণমূলের বদন্যতায় তাঁদের হাতে পৌঁছে যাচ্ছে এ দেশের পরিচয়পত্র ৷ এরাই তৃণমূলের ভোটব্যাঙ্ক ৷ ভোটের সময় সন্ত্রাস চালাতে এদেরই ব্যবহার করে শাসকদল ৷ সবচেয়ে বড় কথা ভারত-বাংলাদেশ লাগোয়া বসিরহাটের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে এরা এ দেশে প্রবেশ করে ও বিভিন্ন প্রান্তে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ চালায় ৷ তারপরেও শুধুমাত্র ভোটব্যাঙ্কের দিকে তাকিয়ে এই সন্ত্রাসবাদীদের আশ্রয় এবং প্রশয় দিয়ে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস ৷ বিশ্বের কোনও দেশে এটা হয় না ৷ একমাত্র পশ্চিমবঙ্গকে বাদ দিয়ে ৷ অবিলম্বে ওই বাংলাদেশি দম্পতিকে গ্রেফতার করা উচিত ৷”