
রাতের আধারে মৃৎশিল্পী তপন সরকারের নির্মাণাধীন দুর্গা ও কালী প্রতিমা ভাংচুর করেছে। এতে তপন সরকার প্রায় আড়াই লক্ষ টাকার আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে, ১৩ সেপ্টেম্বর শনিবার রাতে ভারত ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা শহরের রাঙ্গুটিয়া কালী বাজার এলাকার মৃৎশিল্পী তপন সরকারের বাড়িতে।
মৃৎশিল্পী তপন সরকার জানান, শুক্রবার রাত দশটা পর্যন্ত মূর্তি নির্মাণের কাজ করেছেন তিনি। তারপর শারীরিক ভাবে ক্লান্তি বোধ করায় ঘরে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। শনিবার ভোর পাঁচটা নাগাদ ঘুম থেকে উঠে দেখতে পান সমস্ত মূর্তি ভেঙে দিয়ে গেছে দুষ্কৃতিকারীরা। এবং মুখে কিছু অংশ বাড়ির আশেপাশে জমিতে ফেলে দিয়ে গেছে।
কয়েক মাসের অক্লান্ত পরিশ্রমে প্রতিমা গড়ে তুলছিলেন তিনি। দুর্গাপূজা উপলক্ষে বিভিন্ন মণ্ডপের প্রতিমা তৈরি হচ্ছিল। হঠাৎই এই ভাঙচুরের ঘটনায় তিনি প্রায় আড়াই লক্ষ টাকার আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। তিনি বলেন, “এভাবে প্রতিমা ভেঙে দেওয়া মানে শুধু আমার ক্ষতি নয়, পুরো এলাকার মানুষের অনুভূতিতে আঘাত করা। বহু মানুষের স্বপ্ন ভেঙে গেল আজকের এই ঘটনায়।”
এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন স্থানীয় বামুটিয়া মণ্ডল সভাপতি শিবেন্দ্র দাস। তিনি বলেন, “আজকের এই ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং অমানবিক। পূজোর মতো সামাজিক উৎসবের আগে প্রতিমা ভাঙচুর করার মানসিকতা যারা দেখিয়েছে, তারা সমাজবিরোধী ছাড়া আর কিছু নয়। আমরা চাই, পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নিক এবং অপরাধীদের আইনের আওতায় আনুক।”
ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই রঙ্গোটিয়া কালী বাজার এলাকায় ভিড় জমায় স্থানীয় বাসিন্দারা। চারদিকে শুরু হয় চাঞ্চল্য ও ক্ষোভের স্রোত। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, কেন এমন সময়ে এই হামলা করা হলো? পূজোর প্রস্তুতি যখন চূড়ান্ত পর্যায়ে, তখন প্রতিমা ভাঙচুর নিছক দুষ্টুমি নয়, এর পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে বলেই মনে করছেন তারা।
অন্যদিকে খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় বামুটিয়া ফাঁড়ির পুলিশ। ভাঙচুর হওয়া প্রতিমাগুলি পরিদর্শন করেন দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকরা। প্রাথমিকভাবে তদন্ত শুরু হলেও এখনো পর্যন্ত কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটির নেপথ্যে কারা জড়িত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং শিগগিরই অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা হবে।