
পুজা মণ্ডপে গভীর রাতে নাচানাচি করতে বাধা দেয়ায় মুসলিম যুবকদের হামলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্তত ৮ জন আহত হয়েছেন। হামলাকারীরা লোকজনের ওপর হামলা ছাড়াও মণ্ডপের সামনে থাকা ২০-২৫টি চেয়ার ও তিনটি টেবিল ভাঙচুর করে। তাছাড়া মণ্ডপ সংলগ্ন দুটি বাড়িতেও হামলার চেষ্টা চালায়।
এই ঘটনা ঘটে, ১লা অক্টোবর বুধবার দুর্গাপুজার নবমীর রাত ২টার দিকে, নেত্রকোনা জেলা মোহনগঞ্জ উপজেলার খুরশিমুল গ্রামের সর্বজনীন দুর্গাপূজা মণ্ডপে।
জানাযায়, খুরশিমুল এলাকার যুবসংঘ বরাবরের মতো এবারও স্থানীয় হরিমন্দিরের পাশে দুর্গাপূজার আয়োজন করে। বুধবার রাত ১২টা পর্যন্ত মণ্ডপের সামনে আরতি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। রাত দেড়টার দিকে পাশের পেরিরচর ও সিয়াধার গ্রামের ১৫-২০ জন যুবক এসে সাউন্ড বক্সে গান বাজিয়ে নাচানাচি করতে চায়।
তাদের অনুরোধে আয়োজকরা প্রথমে দুইটি এবং পরে আরো তিনটি গান বাজিয়ে নাচানাচি করার সুযোগ করে দেন। এরপর তারা আরো নাচতে চাইলে আয়োজকরা গভীর রাত এবং মন্দিরের আনুষাঙ্গিক কাজকর্মের কথা বলে অসম্মতি জানান।
এ নিয়ে আয়োজকদের সঙ্গে যুবকদের তর্ক-বিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে উচ্ছৃঙ্খল যুবকরা উপস্থিত লোকজনের ওপর হামলা চালায়।
এতে পূজা কমিটির সভাপতি অমিত দাস ছাড়াও অজয় দাস, আকাশ দাস, অনন্ত দাস, সুমন দাস, সত্যজিৎ চক্রবর্তী, পরিতোষ দাস ও অনিক দাস আহত হন।
আহতরা বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলাকারীরা মণ্ডপ প্রাঙ্গণে ২০-২৫টি প্লাস্টিকের চেয়ার ও তিনটি টেবিল ভাঙচুর করে। তাছাড়া মণ্ডপ সংলগ্ন সুজিত দাস ও রামধন চৌধুরীর বাড়িতে গিয়েও হামলার চেষ্টা এবং খুরশিমূল বাজারের কিছু দোকানে ইট-পাটকেল ছুঁড়ে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আয়োজক কমিটির কয়েকজন জানান, হামলাকারী যুবকদের মধ্যে তাঁরা কয়েকজনকে চিনেছেন। তাঁদের মধ্যে সিয়াধার গ্রামের দুর্জয় ইসলাম, মেহেদী হাসান, পেরীরচর গ্রামের মুন্না মিয়া, অন্তর মিয়া, আকাশ, রানা ও আজিজুল ইসলাম আছেন। হামলাকারীদের বয়স ২২–২৫ বছরের মধ্যে।
এ বিষয়ে ওই তরুণ-যুবকদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘটনার পরপরই তাঁরা গা ঢাকা দিয়েছেন।
মোহনগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা রাতেই ঘটনাস্থলে গেছি। সেখানে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’