
হাওরে ট্রলারের মধ্যে ডাকাতি করে ৫ ভরি ১২ আনা স্বর্ণ, ১৭৫ ভরি রুপা ও নগদ ৮৫ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে গেছে। এই সময় ডাকাতের হামলায় আহত হয় প্রান্ত পাল (১৮)।
ডাকাতির ঘটনা ঘটে ২৭ সেপ্টেম্বর শনিবার সন্ধ্যায় নেত্রকোনা জেলা খালিয়াজুরী উপজেলার মেন্দিপুর ইউনিয়নের জগন্নাথপুর ও বোয়ালীর মাঝামাঝি নাওটানা কুরেরপাড় হাওরে।
ভুক্তভোগী স্বর্ণ ব্যবসায়ী হিমেল বণিক (২৮) মোহনগঞ্জ পৌর শহরের দেওথান গ্রামের হীরা বণিকের ছেলে।
জানা যায়, খালিয়াজুরী উপজেলার জগন্নাথপুর বাজারে হিমেল বণিকের স্বর্ণের দোকান রয়েছে। মোহনগঞ্জ বাজারে পোদ্দারপট্টিতেও তাঁর স্বর্ণের দোকান আছে। জগন্নাথপুর বাজারের দোকানে কেবল কাজের অর্ডার নেওয়া হয়। গয়না তৈরির সেসব অর্ডার সংগ্রহ করে মোহনগঞ্জ বাজারের দোকানে নিয়ে যান হিমেল বণিক। পরে সেখানে কারিগর দিয়ে গয়না তৈরি করে সেগুলো আবার জগন্নাথপুর বাজারের দোকানে নিয়ে গিয়ে কাস্টমারদের সরবরাহ করেন। শনিবার সন্ধ্যার দিকে জগন্নাথপুর বাজার থেকে ৫ ভরি ১২ আনা স্বর্ণ, ১৭৫ ভরি রুপা ও নগদ ৮৫ হাজার টাকা নিয়ে ট্রলারে করে মোহনগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হন হিমেল বণিক। তাঁর সঙ্গে দোকানের কর্মচারীসহ ট্রলারে আরও তিন-চার জন যাত্রী ছিলেন। পথে জগন্নাথপুর ও বোয়ালীর মাঝামাঝি নাওটানা কুরেরপাড় হাওরে এলে একটি মাছ ধরার ট্রলারে এসে ডাকাতেরা তাঁদের গতিরোধ করে। এ সময় দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে ১৪-১৫ জনের ডাকাত দল তাঁদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় হিমেল বণিক পানিতে লাফিয়ে পড়েন। তবে তাঁর কর্মচারী প্রান্ত পালকে মারধর করে তাঁর কাছে থাকা সোনা, রুপা ও নগদ টাকা নিয়ে যায় ডাকাতেরা। ট্রলারে থাকা মাঝি ও অন্য যাত্রীদের মোবাইল ফোনও নিয়ে যায় তারা। একই সময় আরও একটি ট্রলারে হামলা চালিয়ে দুই যাত্রীকে জখম করে তাঁদের কাছ থেকেও নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন নিয়ে যায়।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী হিমেল বণিক বলেন, ‘সন্ধ্যায় স্বর্ণালংকার নিয়ে রওনা হওয়ার পর ডাকাতেরা আমার পিছু নেয়। জগন্নাথপুর ও বোয়ালীর মাঝামাঝি নাওটানা কুরেরপাড় হাওরে একটি মাছ ধরার ট্রলারে করে এসে ডাকাতেরা প্রথমে অন্য একটি যাত্রীবাহী ট্রলারে হামলা চালায়। সেখানে দুজনকে কুপিয়ে জখম করে টাকা-পয়সা ও মোবাইল ফোন নিয়ে নেয়। পরে আমাকে বহনকারী ট্রলারে হামলা চালায়। আমি লাফ দিয়ে পানিতে পড়ে যাই। তবে সঙ্গে থাকা কর্মচারীকে পিটিয়ে তার কাছে থাকা স্বর্ণ, রুপা ও টাকা নিয়ে যায়।’
খালিয়াজুরী থানার ওসি মকবুল হোসেন বলেন, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। ততক্ষণে ডাকাতেরা পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় এখনো কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ করেনি। তবে ঘটনার তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ধরার পাশাপাশি লুণ্ঠিত মালামাল ও স্বর্ণালংকার উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।