
আবারও সীতাকুন্ড চন্দ্রনাথ মন্দির মুসলিমদের টার্গেটে। তারা এখন চেষ্টা করতেছে চন্দ্রনাথ পাহাড়ে মসজিদ তৈরির। তারা জানিয়েছ মসজিদ তৈরির প্রস্তুতি প্রায় ৯০ শতাংশ বাস্তবায়ন করে ফেলেছে।
গতকাল ১৬ আগষ্ট ব্যবসায়ি মুফতি সাইফুল ইসলাম এক ফেসবুক পোস্টে জানান, “সীতাকুণ্ড পর্বতের চূড়ায় মসজিদ ৯০% কনফার্ম। আলহামদুলিল্লাহ্। বিস্তারিতঃ আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন গতকাল সীতাকুণ্ড পর্বতে উঠেছিলাম, চন্দ্রনাথ পাহাড়ের চূড়ায় উঠে সুন্দর দৃশ্য দেখতে কার না ভালো লাগে বলুন??

আমিও তার ব্যতিক্রম নই,এরপর পর্বতে ওঠা, প্রথমে অনেকেই বলেছিলো হুজুর আপনার এই মোটা শরীর নিয়ে উঠতে পারবেন না, তবে আমি প্রথমেই বলেছি যদি ১ দিন সময়ও লাগে আমি চূড়ায় উঠেই ছাড়বো,প্রয়োজনে মাঝে মাঝে বিশ্রাম করবো। যেই কথা সেই কাজ। উঠতে উঠতে উপরে উঠলাম, তবে উপরে উঠার পর, যখন নামাজ পড়ার বিষয়ে কথা বললাম, সাফ জানিয়ে দিলো,তাদের পবিত্র ভূমিতে নামাজ পড়তে দিবে না এমনকি গত ২ বছর পূর্বে আজান দেওয়ার জন্য ২ জনকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছিলো তা শুনিয়ে ভয় দিলো। বিষয়টি খুব খুবই গয়রাতে লাগলো। এরপর এক একজন পর্যটককে নামাজের বিষয়ে বললে, সকলের একটাই আফসোস, যদি আমাদের জন্য একটি নামাজের জায়গা থাকতো,তাহলে আমাদের নামাজ ক্বাজা হতো না। পাহাড়ে উঠে মনোরম দৃশ্য দেখলাম এরপর পাহাড় থেকে নামলাম ঠিকই,কিন্তু কোন ভাবে মনে শান্তি পাচ্ছিলাম না। শুধু আফসোস করতেছিলাম, ৯৩% মুসলমানের দেশে,পাহাড়ের চূড়ায় পাশাপাশি ২টি মন্দির থাকতে পারে, আর আমরা সালার ভাড়াটিয়া, মসজিদ তো দূরের কথা নামাজ পড়ার অনুমতি পাই না। হাটহাজারী মাদ্রাসায় গেলাম,ছাত্রদের সাথে সাক্ষাৎ করলাম,
রাতের খানাও শেষ করলাম,মাগার মাথা থেকে কোন ভাবেই নামাজের বিষয়টি ভুলতে পারলাম। ছাত্রদেরকে সাথে নিয়ে পরামর্শ করলাম কি করা যায়? পরামর্শে সকলে শায়েখ হারুন ইজার সাহেবের সাথে কথা বলতে বললেন, সাথে সাথে এ্যাকশন। ফজর নামাজের পর, হাটহাজারী থেকে সোজা, শায়েখের মাদ্রাসায়।

আলহামদুলিল্লাহ্, ছুম্মা আলহামদুলিল্লাহ্, শায়েখ মাদ্রাসায় আসার সাথে সাথে সর্বপ্রথম আসরাফ আলি উদ্দিন ভাই সরাসরি শায়েখের সাথে সাক্ষাৎ করালেন, হুজুর ইনি মুফতি সাইফুল ইসলাম তার জুতার ফ্যাক্টরি রয়েছে খুব ভালো জুতা বানায়, আমিও ব্যবহার করি, শায়েখ ব্যবসায়ী শুনে খুব খুশী হলেন দোয়া করলেন, আলেম ব্যবসায়ী অনেক প্রয়োজন। আমি পিছনে পিছনে যাচ্ছিলাম, শায়েখ একটি তাকাজা নিয়ে এসেছিলাম,বলবো? বলো বলো…. এরপর হুজুরকে গতকালের পূর্ণ গঠনা খুলে বললাম এবং বললাম ওখানে একটি নামাজের জায়গা প্রয়োজন। হুজুর সাথে সাথে বললেন, মাওলানা সুন্দর তাকাজা নিয়ে এসেছেন। সুন্দর উদ্যোগ,তবে মসজিদ করতে তো অর্থের যোগান লাগবে। অকপটে বললাম শায়েখ টাকার ব্যবস্থা আমি করবো। শুনার সাথে সাথে বললেন, এখানে মসজিদ করা আমার দায়িত্ব। আপনি টাকার ব্যবস্থা করেন,আমাকেও আর্থিক সহযোগী হিসাবে রাইখেন ইনশাআল্লাহ্ বাকি টাকর ব্যবস্থা আপনি করুন। আগামীকালই প্রশাসনের সাথে কথা বলে ফাইনাল করতেছি। মসজিদ অবশ্যই হবে ইনশাআল্লাহ্ । মন্দিরের পাশে না হোক,আশপাশে হবেই ইনশাআল্লাহ্।”
উল্লেখ, গত ২০২১ সালের ২৭ আগষ্ট সীতাকুন্ডের চন্দ্রনাথ পাহাড়ে গিয়ে দুই মুসলিম যুবক আজান দেয় এবং আজান দেওয়ার ছবি ফেইসবুকে পোস্ট করে ধর্মীয় উসকানিমূলক বার্তা দেয়।

এই দুই মুসলিম যুবক হলো, কুমিল্লা জেলা দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর এলাকার মুহাম্মদ শিব্বির বিন নজির (২১) ও রিফাত খন্দকার (২১)। তারা ঢাকার মোহাম্মদপুর মাদ্রাসার শিক্ষার্থী।

আজান দেওয়ার ছবি ফেইসবুকে পোস্ট করে মুহাম্মদ শিব্বির বিন নজির লেখেন, “চন্দ্রনাথ পাহাড়ের চূড়ায় ওঠে আজান দিলাম। আলহামদুলিল্লাহ। ইনশাআল্লাহ অতি শীঘ্রই সেখানে ইসলামের পতাকা ওড়বে।”
এই বিষয়ে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব অ্যাডভোকেট গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক বলেন, “মক্কার সীমানার চারপাশে “only Muslims” (শুধুমাত্র মুসলিম) লেখা সাইনবোর্ড টানানো আছে। চট্টগ্রামের চন্দ্রনাথ ধামের চতুর্দিকে ” শুধুমাত্র সনাতনী” সাইনবোর্ড টানানো হোক। অসনাতনীদের প্রবেশ অবৈধ ও বে- আইনী ঘোষনা করা হোক। এটা করতে হবে চট্টগ্রামের ডিসিকে। সনাতনীরা ডিসির কাছে এই মর্মে স্মারকলিপি প্রদান করুক।”
এই বিষয়ে বাংলাদেশ সনাতন পার্টির সাধারন সম্পাদক এডভোকেট সুমন কুমার রায় বলেন, “সনাতনী সম্প্রদায়ের পবিত্র তীর্থস্থান সীতাকুন্ডু নিয়ে কোন ষড়যন্ত্র সনাতনী সম্প্রদায় মেনে নিবে না। সারা বিশ্বের সকল সনাতনী সম্প্রদায়কে নিয়ে এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো হবে। এই ধরনের ষড়যন্ত্রকারীরা দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য একটি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করছে, তাদের মূল লক্ষ্য এদেশ থেকে হিন্দু শূন্য করা। যার পরিনতি এ দেশের সকল শান্তিপ্রিয় জনগনের জন্য ভয়ংকর হতে পারে।