নওগাঁয় ৫০ টি হিন্দু পরিবারের চলাচলের রাস্তায় বাধা

নওগাঁ জেলা বদলগাছী উপজেলার আধাইপুর ইউনিয়নের পাতকোলা গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি বন্ধ করে দেওয়ার পাঁয়তারা শুরু হয়েছে। এতে বিপাকে পড়তে যাচ্ছেন প্রায় ৫০টি হিন্দু পরিবার।

দীর্ঘদিনের পুরনো এই রাস্তা ঘিরে হিন্দু ও মুসলিম দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে বিরাজ করছে চরম উত্তেজনা। পুরনো রাস্তায় নতুন সংঘাত।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পাতকোলা হিন্দুপাড়া মূল সড়ক থেকে কিছুটা দূরে অবস্থিত। সেখানে পৌঁছাতে কোনো সরকারি রাস্তা না থাকায় শত বছর ধরে হিন্দু পাড়ার লোকজন দুই জমির মাঝখানের একটি আইল দিয়ে যাতায়াত করে আসছেন। সময়ের ব্যবধানে এটি পাকা রাস্তার মতো স্বীকৃতি পায়। কিন্তু সম্প্রতি প্রবেশমুখে বসবাসকারী দুই মুসলিম পরিবার রাস্তাটি বন্ধ করে দিয়ে অন্য দিক দিয়ে বিকল্প রাস্তা তৈরির দাবি জানায়। এর জেরে দুই পক্ষের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রবীণ বাসিন্দারা বলেন, “আমাদের বাপ-দাদার আমল থেকেই এই রাস্তা ব্যবহার করছি। পাটকোলা মৌজার ৪৯৫ নং দাগে ১.৫ শতাংশ জমি ছাড়ও দেওয়া হয়েছিল এই রাস্তার জন্য। অথচ এখন হঠাৎ রাস্তা বন্ধের চেষ্টা চলছে। যেকোনো সময় জোর করে রাস্তাটি বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে।”

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, মুসলিম পরিবারের পক্ষ থেকে ভয়ভীতি, কাদা-পানি ফেলা, গরুর হাড় ছড়িয়ে রাখা— এমন নানা উপায়ে হিন্দুদের চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে। এতে গ্রাম ছাড়ার হুমকিও দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তারা।

মুসলিম পরিবারের বক্তব্য এদিকে অভিযুক্ত মুসলিম পরিবারের সদস্য মো. নাহিদ হোসেন বলেন, “আমাদের বাড়ির সামনে দিয়ে কোনো রেকর্ডীয় রাস্তা নেই। এ কারণে আমরা বিকল্প রাস্তা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছি। আমাদের বাড়ির সামনে দিয়ে মানুষজন চলাচলের কারণে আমরা নানা সমস্যায় পড়ছি।

আধাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ.কে.এম রেজাউল করিম (পল্টন) বলেন, “হিন্দু ও দুই মুসলিম পরিবারের মধ্যে রাস্তা নিয়ে উত্তেজনা রয়েছে। ভারী বৃষ্টির কারণে রাস্তায় হাঁটু পরিমাণ কাদা জমে চলাচলে অসুবিধা হচ্ছিল। ইউনিয়ন পরিষদ উদ্যোগে সেখানে বালু ফেলা হয়েছে।”

আশঙ্কা স্থানীয়দের মতে, দ্রুত সমাধান না হলে এ বিরোধ যে কোনো সময় বড় ধরনের অপ্রতিকর ঘটনার জন্ম দিতে পারে। তাই তারা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *