
চাঁদা না দেওয়ায় নারায়ণ ভবানীকে(৫৫) মারধর করেছে নবাব হোসেন ওরফে বাচ্চু (৩০)। মারধরে আহত নারায়ণ ভবানী (৫৫) বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এদিকে, ঘটনার পর চাঁদাবাজ নবাব হোসেন ওরফে বাচ্চু কে কে গ্রেপ্তারের দাবিতে থানা চত্বরে গিয়ে অবস্থান নেন গ্রামের লোকজন।
১৬ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে রাজশাহী জেলা বাগমারা উপজেলার গোবিন্দপাড়া ইউনিয়নের চাঁইসাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত নবাব হোসেন ওরফে বাচ্চু (৩০) জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের গোবিন্দপাড়া ইউনিয়ন শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তার বাড়ি বাগমারা উপজেলার গোবিন্দপাড়া ইউনিয়নের চাঁইসাড়া গ্রামে।
জানা যায়, বাগমারা উপজেলার চাঁইসাড়া গ্রামের বাসিন্দা নারায়ণ ভবানীর কাছে সপ্তাহখানেক আগে পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন নবাব হোসেন। ওই সময় নারায়ণকে হুমকি দিয়ে নবাব বলেন, ‘গ্রামে থাকতে হলে টাকা দিতে হবে। না দিলে সমস্যা হবে।’ তখন টাকা দিতে অপারগতা জানান নারায়ণ ভবানী। মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণ গ্রামের একটি চালকল থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে তার গতি রোধ করেন নবাব হোসেন। তাকে কেন পাঁচ হাজার টাকা দেওয়া হয়নি, এ নিয়ে কৈফিয়ত চান। এক পর্যায়ে নবাব হোসেন ক্ষুব্ধ হয়ে সেখানেই নারায়ণ ভবানীকে মারধর করে ফেলে চলে যান। পরে লোকজন তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। ঘটনাটি জানাজানি হলে চাইসাঁড়া গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের শতাধিক নারী ও পুরুষ ২০ কিলোমিটার দূরে বাগমারা থানায় এসে প্রতিবাদ জানান। তারা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত, নবাব হোসেনকে গ্রেপ্তার ও নিজেদের নিরাপত্তার দাবি জানান। এ বিষয়ে পুলিশ মামলা গ্রহণ, জড়িত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার ও নিরাপত্তার আশ্বাস দিলে দুপুর আড়াইটায় তারা থানা চত্বর ত্যাগ করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতাল শয্যায় ব্যথায় কাতরাচ্ছেন আহত নারায়ণ ভবানী। তিনি বলেন, ‘নবাব হোসেন খুবই খারাপ, তার হাতে সব সময় অস্ত্র থাকে। মামলা করতেও ভয় পাচ্ছি।’
নারায়ণ ভবানী আরও বলেন, ‘জমি চাষাবাদ করে আমার ভালোভাবেই চলে যায়। শহরে রেখে ছেলেকে লেখাপড়া করাই। গ্রামে সচ্ছল হওয়ায় আমি নবাব হোসেনের চাঁদার টার্গেট হয়েছি।’
চাঁইসাড়া গ্রামের বাসিন্দারা জানান, নবাব হোসেন উপজেলা বিএনপির এক শীর্ষ নেতার ক্যাডার হিসেবে পরিচিত। তিনি চাঁদাবাজি, দখল ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত। ওই নেতার নির্দেশে এসব কর্মকাণ্ড করেন নবাব।
বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় মামলা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। নবাবের বিরুদ্ধে আগেও অনেক অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ তাকে আটকের চেষ্টা করছে। একইসঙ্গে চাঁইসাড়া গ্রামের লোকজনের নিরাপত্তার বিষয়টিও দেখবে পুলিশ।