সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি নিয়োগে নেই কোন হিন্দু বিচারপতি!

ছবি: আইন মন্ত্রণালয়।

সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে ২৫ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নিয়োগ পাওয়া ২৫ জন বিচারপতির মধ্যে নেই একজন ও হিন্দু বিচারপতি। এই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়।

রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ৯৫(১) অনুচ্ছেদ অনুসারে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে পরামর্শের ভিত্তিতে সংবিধানের ৯৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ২৫ জনকে হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন।

৯ জন বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা, ৯ জন আইনজীবী ও ৭ জন আইন কর্মকর্তা অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।

নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব, অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিব, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল, সলিসিটর, জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের সচিব, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবং সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রয়েছেন।

নিয়োগ পাওয়া বিচারপতিরা হলেন,
চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ মো. নুরুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমদ ভূঞা এবং জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের সচিব মুরাদ-এ-মাওলা সোহেল।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীদের মধ্যে রয়েছেন মো. আনোয়ারুল ইসলাম শাহীন, রাজিউদ্দিন আহমেদ, ফয়সল হাসান আরিফ, ফাতেমা আনোয়ার, আবদুর রহমান, সৈয়দ হাসান যুবাইর, মো. আসিফ হাসান, মো. জিয়াউল হক ও উর্মি রহমান।
অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস থেকে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল দিহিদার মাসুম কবীর, মো. মনজুর আলম, মো. লুৎফর রহমান, রেজাউল করিম, মাহমুদ হাসান, এ. এফ. এম সাইফুল করিম ও এস. এম. সাইফুল ইসলাম নিয়োগ পেয়েছেন।
হবিগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ জেসমিন আরা বেগম একমাত্র নারী বিচারক, যিনি অধস্তন বিচার বিভাগ থেকে হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। এছাড়া, সুপ্রিম কোর্টের দুই নারী আইনজীবী—ফাতেমা আনোয়ার ও উর্মি রহমান তালিকায় রয়েছেন।
আইন ও বিচার বিভাগের সচিব শেখ আবু তাহের, অতিরিক্ত সচিব মো. সাইফুল ইসলাম ও যুগ্ম সচিব এসএম সাইফুল ইসলাম এবং সলিসিটর শাখা প্রধান মো. রফিজুল ইসলাম নিয়োগ পেয়েছেন।

সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, মামলার জট কমাতে এবং বিচার ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যে সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে এটি হাইকোর্টে একসঙ্গে সর্বাধিক নিয়োগ।

২৬ আগস্ট মঙ্গলবার দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে নতুন বিচারপতিদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিয়োগ পাওয়া ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. লুৎফর রহমান জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সমন্বয়ক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমের শ্বশুর।

এই বিষয়ে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব অ্যাডভোকেট গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক ত্রিকালকন্ঠকে বলেন, ১৯৫৪ সালের পর থেকেই তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান বর্তমান বাংলাদেশে সর্বক্ষেত্রে নিয়োগে হিন্দুদের নিয়ে বৈষম্য চলছে। বাংলাদেশ স্বাধীন হলে অবস্থার পরিবর্তন হবে মনে করা হয়েছিলো কিন্তু তা হয়নি। স্বাধীনতার পর মানুষ মনে করেছিলো স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার আলবদর আল সামশ্ এর বিচার হবে, শাস্তি হবে। কিন্তু তা হয়নি। বরং শেখ মুজিব তাদের সাধারন ক্ষমা ঘোষনা করে হিন্দুদের সম্পত্তি শত্রু সম্পত্তি ঘোষনা করে হিন্দুদের ২৬ লাখ একর সম্পত্তি দখল করে নিয়েছে। সরকার চাকুরীর থেকে হিন্দুদের ছুড়ে ফেলে দিয়েছে। তখন থেকেই এই অবস্থা অব্যাহত রয়েছে। ভারতীয় নেতৃবৃন্দ এবং বাংলাদেশী হিন্দু নেতৃবৃন্দ সব সময় নির্বুদ্ধিতায় জমিদার ও ধনী হিন্দুদের দেশ ছাড়তে হয়েছে। আর গরীব ও সাধারন হিন্দুদের খেশারত দিতে হচ্ছে পদে পদে। পাকিস্থানের সাথে তফশিলী নেতৃবৃন্দের চুক্তি বাতিলই আসল সমস্যার কারণ। চুক্তিটি অব্যাহত থাকলে পার্লামেন্টের হিন্দুদের ৭২টি রিজার্ভ সিট থাকতো। সরকারী চাকুরীতে ৩০% কোটা থাকতো। তাহলে আর কোন সমস্যা থাকতো না। কিন্তু হিন্দুরা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের লেজুরবৃত্তি করে সুবিধা নেয়ার চেষ্টা করছে। তবুও সমস্যার স্থায়ী সমাধানের চেষ্টা বা আন্দোলন করছে না। আমরা প্রথম থেকেই বলছি বাংলাদেশে হিন্দু সমস্যার একমাত্র সমাধান পাকিনস্থানী নেতৃবৃন্দের সাথে হিন্দু নেতাদের চুক্তির পূর্নবহাল । অর্থাৎ সর্বক্ষেত্রে সংরক্ষন ও পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থার পূর্নবহাল। তা না হলে হিন্দুদের অবস্থা দিন দিন খারাপ হবে। হিন্দুদের সব ক্ষেত্রে উপেক্ষা করা হবে। সব ক্ষেত্র থেকে বঞ্চিত করা হবে। শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলেরর চামচারা কিছু সুযোগ সুবিধা পাবে। সাধকরন হিন্দুরা কিছুই পাবে না। বাংলাদেশে হিন্দুর অস্তিত্ব বিলিন হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *